Pages

Sunday, July 1, 2012

স্কুলশিক্ষিকার ছবি বিকৃত করে প্রচার, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

 

এক স্কুলশিক্ষিকা ও মানবাধিকারকর্মীর ছবি বিকৃত করে মুঠোফোন ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ আবদুল হামিদ সরদার (৫০) নামের বিএনপির এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার রাত নয়টায় তাঁকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের গোলাম রহমানের ছেলে।
ওই শিক্ষিকা ও মানবাধিকারকর্মী জানান, ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর সাতক্ষীরা শহরের লাবণী মোড় এলাকায় তাঁকে লাঞ্ছিত করে মুঠোফোন ছিনতাই করে নেয় কয়েকজন সন্ত্রাসী।
এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় ২৫ অক্টোবর কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের সমীর দে ও পাইকগাছা উপজেলার বাকা গ্রামের সুশান্ত করসহ কয়েকজনের নামে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেন।
জামিনে মুক্তি পেয়ে সমীর দে স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এজাহারভুক্ত আসামিদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ১ মার্চ সমীর কুমার দে ও হামিদ সরদার মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখান। উপায়ান্তর না দেখে তিনি এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সমীর কুমার দে, হীরালাল বিশ্বাস, কার্তিক সরকার, আবদুল হামিদ ও দেবহাটা উপজেলার নাংলা গ্রামের ইয়াসিন আলী তাঁকে চাকরিচ্যুত করবে এবং সম্মানহানি করবে বলে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। ২৩ জুন ওই ব্যক্তিরা তাঁর ছবির সঙ্গে অন্য পুরুষের ছবি বিকৃত করে লাগিয়ে মুঠোফোন ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। এমনকি তাঁর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এসব ঘটনা উল্লেখ করে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত ২৮ জুন রাতে তিনি বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
আবদুল হামিদ জানান, তিনি কালীগঞ্জ ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওই শিক্ষিকা উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করেন। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্য হিসেবে তাঁর আচরণ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার প্রতিবাদ করায় তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জসিমউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের সমীর দে, আবদুল হামিদসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। আবদুল হামিদকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে শিক্ষিকার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

prothom-alo.com

No comments:

Post a Comment